নজরদারিতে আসছে ১ কোটি ৭০ লাখ ফেসবুক ইউজার, নিয়ন্ত্রণে বসছে সার্ভার ।
আসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন আপনারা সবাই? আশাকরি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছেন।আমিও ভালোই
আছি।আজ আপনাদের কাছে আমি যেটা শেয়ার করব সেটা এমন একটি জিনিস সেটা হল ফেইসবুক নজরদারি করতে যাচ্ছে সরকার ।
বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ
করতে এবার ফেসবুক নজরদারি করতে যাচ্ছে সরকার। বিশেষ করে জঙ্গি তৎপরতা, ব্ল্যাকমেইল, হুমকি, চাঁদাবাজি ও অপপ্রচার দমনে এ উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। ফেসবুক নিয়ে অসংখ্য অভিযোগের
প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)কে বিশেষ নির্দেশনা
দেয় সরকার। এরই আলোকে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।
প্রাথমিকভাবে তারা
বাংলাদেশে সার্ভার বসাতে রাজি হয়েছে। বাংলাদেশে এই মুহূর্তে ৫ কোটি ইন্টারনেট
গ্রাহকের মধ্যে শুধু ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১ কোটি ৭০ লাখ। এ প্রসঙ্গে বিটিআরসির
লিগ্যাল অ্যান্ড লাইসেন্সিং বিভাগের মহাপরিচালক একেএম শহীদুজ্জামান বলেন, সমপ্রতি ফেসবুকের মতো সোস্যাল মিডিয়া ব্যবহার
করে অনেক ধরনের অপকর্ম হচ্ছে। এসব বন্ধ করতে এরই মধ্যে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে
আলোচনা করা হয়েছে। তাদেরকে বলা হয়েছে বাংলাদেশে একটি সার্ভার বসাতে। ফেসবুক এতে
প্রাথমিকভাবে সম্মতি জানিয়েছে। এটা সম্ভব হলে অনেক অভিযোগের সমাধান হবে। বিটিআরসি
জানিয়েছে, বাংলাদেশে ফেসবুকে ১৩ থেকে ১৭ বছর
বয়সী ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৭ শতাংশ এবং ১৮ থেকে ২২ বছর বয়সীদের হার ৪২ শতাংশ। দেশে
গত বছর একই সময়ে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ১ কোটি। এর মধ্যে ৮২ লাখ পুরুষ
এবং ২২ লাখ নারী ছিল। শুধু ১৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সীর সংখ্যা ছিল ৭৪ লাখ। ফেসবুক
নজরদারি প্রসঙ্গে বিটিআরসির সচিব সরওয়ার আলম জানান, বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এ বিষয়ে সরকারি পর্যায়ে ‘মিউচুয়াল এগ্রিমেন্ট’ নিয়ে আলোচনা করছে। এই চুক্তির ফলে সমস্যা
অনেকাংশে কমার আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক মাধ্যম যুক্তরাষ্ট্রতে রয়েছে, তাই চুক্তি হলে এ বিষয়ে সুবিধা হবে। গত বছর
ডিসেম্বরে বিটিআরসির কমিশন বৈঠকে ফেসবুক ও গুগলের অ্যাডমিন প্যানেল স্থাপনে
আবেদনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বিটিআরসির কর্মকর্তারা জানান, কোন ওয়েবসাইট কিংবা ব্লগে সাইবার অপরাধের ঘটনা
ঘটলে কিংবা ক্ষতিকর কোন উপাদান সংযুক্ত করা হলে, তার বিরুদ্ধে সহজেই ব্যবস্থা নেয়া যায়।
ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ের মাধ্যমে সহজেই ওই ওয়েবসাইট কিংবা ব্লগের লিংক
বন্ধ করা যায়। এ ধরনের প্রায় এক হাজার লিংক বন্ধ করা হয়েছে। তবে ফেসবুক কিংবা গুগল
পরিচালিত ইউটিউবের কোন লিংক এককভাবে বন্ধ করা যায় না। এক লিংক বন্ধ করতে গেলে পুরো
ডোমেইন বন্ধ হয়ে যায়। ফলে সাধারণ ব্যবহারকারীরা ফেসবুক ব্যবহার থেকে বঞ্চিত হন।
বাংলাদেশের সঙ্গে সরকারি পর্যায়ে ফেসবুক কিংবা গুগলের কোন সমঝোতা স্মারক বা চুক্তি
না থাকায় ফেসবুকের কাছে তথ্য চাওয়া হলেও তা তারা দেয় না। গুগলের কাছে কোন ইউটিউব
লিংক বন্ধের আবেদন জানানো হলে তারা আমলেই নেয় না। এ কারণে অন্যান্য দেশের মতো
বাংলাদেশেও ফেসবুক এবং গুগলের অ্যাডমিন প্যানেল স্থাপনের জন্য আবেদনের সিদ্ধান্ত
হয় কমিশনের বৈঠকে। সেই অনুযায়ী আবেদন পাঠানো হয় এবং আবেদনে টেলিযোগাযোগ আইন
অনুযায়ী বিটিআরসি যে রাষ্ট্রীয় স্বাধীন সংস্থা তা উল্লেখ করা হয়। ফেসবুকে
বাংলাদেশের তরুণদের আগ্রহ এবং বহুমুখী ব্যবহারে বাংলাদেশে কিভাবে ফেসবুক জনপ্রিয়
হচ্ছে তা তুলে ধরা হয়। বিটিআরসি জানিয়েছে, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১০ কোটিতে পৌঁছাবে। গত
৮ই নভেম্বর নেদারল্যান্ডস সফর নিয়ে গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনা জঙ্গিদের যোগাযোগ ও অর্থের উৎস বন্ধ করতে সরকারের উদ্যোগের কথা জানান। একই
সঙ্গে অভিযুক্তদের শনাক্ত করতে কিছু ‘অ্যাপ’ বন্ধ করাসহ ইন্টারনেটের উপর ‘সাময়িক কড়াকড়ি’ আরোপের ইঙ্গিত দেন। সামপ্রতিক কয়েকটি হত্যা ও
হামলার ঘটনা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ডিজিটালাইজেশনের ‘শুভফল’ যেমন আছে, ‘খারাপ ফলও’ আছে। এতো বেশি আমরা সেই থ্রি-জিতে, ফোর-জিতে চলে গেছি...ইন্টারনেট-ভাইবার থেকে
শুরু করে নানা ধরনের অ্যাপ ব্যবহার করে এই জঙ্গিরা তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। চলতি
বছরের শুরুতে হরতাল-অবরোধের সময়ও ‘ভাইবার’ ও ‘হোয়াটসঅ্যাপ’সহ ইন্টারনেটে যোগাযোগের কয়েকটি মাল্টিমিডিয়া
অ্যাপ কয়েক দিনের জন্য বন্ধ রাখা হয়। তখন পুলিশ বলেছিল, নাশকতাকারীরা মোবাইলফোনে কথা না বলে
ইন্টারনেটভিত্তিক এসব অ্যাপ ব্যবহার করায় তাদের ধরতে সমস্যা হচ্ছে। এর মধ্যে
ফেসবুকও ছিলো। সংশ্লিষ্টরা জানান, ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশে সার্ভার বসালে এটা বন্ধ না করেও নজরদারি করা সম্ভব
হবে।
সূএ ঃ আমার দেশ ।